হিলি দিয়ে দেড় মাসে ৫৮ কোটি টাকার আলু আমদানি

Passenger Voice    |    ০২:৫৬ পিএম, ২০২৩-১২-১৯


হিলি দিয়ে দেড় মাসে ৫৮ কোটি টাকার আলু আমদানি

চলতি বছরের অক্টোবরে হঠাৎ আলুর বাজার অস্থিতিশীল হয়ে উঠলে দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে ভারত থেকে আমদানির অনুমতি দেয় সরকার। ফলে ২ নভেম্বর থেকে ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে দেশের বাজারে এসেছে ৩৪ হাজার ৯৯৪ টন আলু। যার আমদানি মূল্য ৫৮ কোটি ৫ লাখ ৯৯ হাজার টাকা।

এদিকে, ১৫ ডিসেম্বর থেকে আমদানি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আলুর দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন আমদানিকারকরা। এতে বিপাকে পড়েছেন সাধারণ মানুষজন। এ অবস্থায় আমদানির অনুমতি আরও ১৫ দিন বাড়ানোর দাবি তুলেছেন আমিদানিকারকরা। তবে এরই মধ্যে দেশীয় আলু বাজারে উঠতে শুরু করায় নতুন করে আমদানির মেয়াদ বাড়ানোর সম্ভাবনা কম বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

হিলি স্থলবন্দর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার বন্দর দিয়ে ভারত থেকে আলু আমদানি হয়েছে। আমদানিকৃত নতুন আলু প্রথমদিন ৩৩-৩৪ টাকা কেজি দরে বিক্রি করলেও পরে আরও পাঁচ টাকা বাড়ানো হয়। তবে অধিকাংশ আমদানিকারক বেশি দামে বিক্রির আশায় মজুত করে রেখেছেন। শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটি ও শনিবার মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে দুই দিন বন্ধের পর রবিবার বন্দরের কার্যক্রম শুরু হয়। সেইসঙ্গে আলু কেনাবেচা চলে। এদিন ৪০-৪১ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হয়। 

স্থলবন্দর কার্যালয় সূত্র জানায়, গত ২ নভেম্বর থেকে ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত বন্দর দিয়ে নানা জাতের ৩৪ হাজার ৯৯৪ টন আলু আমদানি হয়েছে, যার আমদানি মূল্য ছিল ৫৮ কোটি ৫ লাখ ৯৯ হাজার টাকা। গত ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত বন্দর দিয়ে পুরোনো লাল বর্ণের কাটিনাল জাতের আলু, সাদা আলু ও নতুন জাতের আলু আমদানি হয়েছে। ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত মেয়াদ থাকলেও ওই দিন শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় গত বৃহস্পতিবারই ছিল আমদানির শেষদিন। আমদানি বন্ধের খবরে ওই দিন পাইকারি পর্যায়ে কেজিপ্রতি ৩৩-৩৪ থেকে ৩৮ টাকায় বিক্রি হয়েছে। গত তিন দিনের ব্যবধানে কেজিপ্রতি চার-পাঁচ টাকা বেড়ে গেছে।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সোমবার বন্দরে প্রতি কেজি কাটিনাল জাতের পুরোনো আলু পাইকারিতে বিক্রি হচ্ছে ৪১-৪২ টাকায়। আর সাদা বর্ণের গোল আলু বিক্রি হচ্ছে ৩৬-৩৭ টাকা কেজি দরে। 

স্থলবন্দরে আলু কিনতে আসা পাইকার আইয়ুব হোসেন বলেন, ‘যেহেতু দেশের বাজারে এখনও দেশীয় নতুন আলু পর্যাপ্ত পরিমাণে আসেনি, তাই দাম নিয়ন্ত্রণে ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে সময়সীমা বাড়ানো দরকার। তা না হলে আবারও সরবরাহ ঘাটতির অজুহাতে আলুর বাজার অস্থিতিশীল হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।’

হিলি স্থলবন্দরের আলু আমদানিকারক আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘দেশের বাজারে আলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে গত ৩০ অক্টোবর আমদানির অনুমতি দেয় সরকার। এই সময়ে দাম স্বাভাবিক ছিল। কিন্তু আমদানি বন্ধের কারণে দাম বেড়ে গেছে। দাম নিয়ন্ত্রণে ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে আমদানির সময়সীমা বাড়ানো দরকার আরও ১৫ দিন। তা না হলে সংকটের অজুহাতে দাম বাড়াবেন ব্যবসায়ীরা।’

হিলি স্থলবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন বলেন, ‘১৪ ডিসেম্বর আমদানির শেষদিন হওয়ায় বন্দর দিয়ে রেকর্ডসংখ্যক আলু এসেছে। এদিন বন্দর দিয়ে ১৯৭টি ট্রাকে পাঁচ হাজার ২০৬ টন আমদানি হয়েছে। গত দেড় মাসে একদিনে এই পরিমাণ আলু অন্য কোনোদিন আসেনি। গত ২ নভেম্বর থেকে ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত বন্দর দিয়ে ৩৪ হাজার ৯৯৪ টন আলু আমদানি হয়েছে। আমদানিকারকরা সব আলু খালাস করে নিয়েছেন।’   

স্থলবন্দরের উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্রের উপসহকারী সংগনিরোধ কর্মকর্তা ইউসুফ আলী বলেন, ‘গত বৃহস্পতিবারই আলু আমদানির শেষদিন ছিল। নতুন করে আমদানির মেয়াদ বাড়ানো হয়নি। মেয়াদ বাড়বে কিনা, সে তথ্য জানা নেই। দেশের আলু চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন এই আশঙ্কায় আমদানি বন্ধ করা হয়েছে।’

প্যা/ভ/ম